21 August, 2013
// ফিলিস্তিন //
সংস্কৃতির শত্রুদের আমরা চুরমার করে দিয়েছি
আমরা পেরেছি,
এবার ওদের কাজ করব আমরা
ওদের থেকে আরো ভালো করে
-----------------------------
মলয়ালাম কবি কে. আয়াপ্পান পানিকার’র কবিতা। অনুবাদ আমার।
// একটি ঘটনা //
// ধুলো //
তুমি ধুলো
পায়ের নিচে চেপ্টে থাকো
দামাল হাওয়ায় জেগে ওঠো
বদলে যাও ঝড়ে
আর উড়ে গিয়ে পড়ো তাদের চোখে যারা
তোমার বুকে পা রেখে হাঁটে।
এমন কোন জায়গা নেই যেখানে
তোমার যাওয়া নেই।
এমন কেউ নেই যে তোমাকে রুখতে পারে
তুমি ধুলো
পায়ের নিচে দাবিয়ে
ধুলোর সঙ্গে মিশিয়ে হাঁটার জন্য
(হিন্দি কবি সর্বেশ্বর দয়াল সাক্সেনা-র কবিতা। অনুবাদ আমার।
//ক্ষুধা//
যখনই
কেউ দাঁড়িয়ে যায়
ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করবে বলে
সুন্দর লাগে তাকে দেখতে
শাঁ করে নেমে আসা বাজপাখি,
ফণা তুলে উঠে দাঁড়ানো সাপ
ছাগলের টালমাটাল দু’ পায়ে
কাঁটা বাঁচিয়ে কচিপাতায় কুটকুট
ঝোপের পিছ নেচিতার চুপিচুপি পা-ফেলা
ডাল থেকে উলটো ঝুলে টিয়ার
ফল ঠোকরানো
কিংবা এদের জায়গায় কোন মানুষ
যখনই
কেউ দাঁড়িয়ে যায়
ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করবে বলে
সুন্দর লাগে তাকে দেখতে।
(হিন্দি কবি সর্বেশ্বর দয়াল সাক্সেনা-র কবিতা। অনুবাদ আমার।
// অর্ঘ //
ফ্রিজের থেকে ঠান্ডা জল খাও
ঘিয়ে চোবানো রুটি খাও
শুভ্র বিছানায় শুয়ে পড়ো
টিভি চালিয়ে মজা করো।
আল্লা, একদিন আমার বাড়িতে এসো
এসো লুকিয়ে থাকো
আমার বাড়িতে একটি দিন।
উর্দু কবি মহম্মদ আলভি’র কবিতা। অনুবাদ আমার।
// ফিলিস্তিন //
সংস্কৃতির শত্রুদের আমরা চুরমার করে দিয়েছি
আমরা পেরেছি,
এবার ওদের কাজ করব আমরা
ওদের থেকে আরো ভালো করে
-----------------------------
মলয়ালাম কবি কে. আয়াপ্পান পানিকার’র কবিতা। অনুবাদ আমার।
// কবি //
নৈঃশব্দ্যে চমকে জেগে উঠে
রাতটাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে
দেখে শুধু
শেষ ভক্তটিও ছেড়ে গেছে তাকে
চলে গেছে।
কেঁপে ওঠে
শুনতে পায়, সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় পিছুপিছু
মহিলার গোঙানি
কাঁদছে, ঘুমের মধ্যেই।
আর যখন ছুটতে পারেনা
নিজেই কেঁদে ফেলে। যখন আর কাঁদতেও
পারেনা বসে পড়ে
ল্যাম্পপোস্টের নিচে
কবিতা লিখবে বলে।
কন্নড়কবিআর. সি. রামচন্দ্রশর্মারকবিতা।অনুবাদআমার।
// একটি ঘটনা //
আমার মৃত্যুটা অনেকদিনের কথা
অনেক সময় ঘুম ভাঙে—আর ভাবি—
আমার চলে যাওয়া উচিত, ছাই ছড়িয়ে দেওয়াও দরকার
আমার মরদেহের কাছে অন্তত এইটুকু তো ঋণী আমি।
সব ঘটনার ব্যাখ্যা করতে পারি, শুধু এইটা না
একটা মরা আর একটা মরার জন্য কাঁদে--
মরার গর্ভ কখনই বন্ধ্যা না।
এমন কি, মরার গর্ভও অসহায়—
মা-প্রেম গর্ভেরও এই অসহায়তা।
মরার কাছে আমার যে ঋণ, তা তো শোধ করতে পারি
কিন্তু গর্ভের কাছে আমার যে ঋণ, তা শোধ করবে কে?
কখনো সখনো, উঠে বসি আর ভাবি—
গর্ভের সব হিসেব-নিকেশ ছিঁড়ে কুটিকুটি করে ফেলব
সইটা লুকিয়ে রাখব
আর আমি ঋণী সে কথাটাই স্বীকার করব না।
উঠে বসি, পা-টা এগিয়ে দিই চৌকাঠে
কিন্তু গর্ভের কাছ থেকে এই পালিয়ে যাওয়া গর্ভকে কাঁদায়
এক ফোঁটা দুধ টপ করে ঝরে পড়ে
আমার মরার বুক থেকে।
বাড়িটা আমাকে চৌকাঠ পার করে দেয়
কিন্তু সেখানেই আমার পা আমাকে আটকে দেয়।
তুমি চোখের জল সাঁতরে যেতে পার
কিন্তু এক ফোঁটা দুধ কেউ সাঁতরাতে পারে না।
আমার মৃত্যুটা অনেকদিনের কথা।
পঞ্জাবী কবিতা। কবি, অমৃতা প্রীতম। বাংলা অনুবাদ আমার
// তরাই //
উপলে খানখান চিরুণী
ধূসর শলাকায় বন্দী দেবদারুকে
বলে পথ করে দিতে
মেঘেরা আটকা পড়েছে মেঘের গায়ে
কাঁখে কোলে নীলাকাশ
বৈধব্যে নতমুখ
হেঁটে যায় ভূটিয়া শিশু
হিল কার্ট রোডের টুংটাং গানের ভেলায়।
স্বপ্নেরা নেমে আসে স্বপ্ন ফেলে
তরীমুখ মোছে পাউডার তিস্তায়
জলে ঘূর্ণিপাকে মাছরাঙা ঠোঁট শানায়
লতাপুতার ভাসন্ত শরীরে।
এইখানে দেখা কোর সিক্ত উপলে
নিঃশ্ছায়া দেবদারু বনে
ছোট এক মহানদীর জলে ভেসে
মনে রেখো স্বপ্নেরা জলপাথর
সব।"
// প্রারম্ভ //
আমার দিদিমা ছিলেন পাগল
এই পাগলপনাতেই একদিন তাঁর মৃত্যু হ’ল
আমার মামা, হাড় কিপটে,
দিদিমাকে ভাঁড়ার ঘরে রেখে
খড় দিয়ে ঢেকে দিলেন।
দিদিমা শুকিয়ে ঝুরঝুর
একদিন ফেটে ছিটকে পড়লেন
তাঁর বীজ উড়ে উড়ে জানালা গলে বাইরে
সুর্য ওঠে, বৃষ্টিও আসে
একদিন একটা বীজ গাছ হয়ে যায়
যার লালসায় আমার জন্ম।
সোনার দাঁত বাঁধানো বাঁদরদের নিয়ে
আমি কি কবিতা না লিখে পারি?
---------------------
মলয়ালী কবি কে. সচ্চিদানন্দের কবিতা। বাংলা অনুবাদ আমার।
যেই শুনলাম কূয়োটায়
একটা কচ্ছপ আছে, আমরা
বাচ্চাদের বাঁদর দল
ছুটে যাই কূয়োর পাড়ে।
উঁকি দিই ভিতরে, দেখতে পাই
আমাদের মাথা, আর নীল আকাশ।
আমরা ইঁট-পাটকেল ছুঁড়ে, বাঁশের ডগা দিয়ে
জলটা নেড়ে ঘেঁটে দিই
কিন্তু কচ্ছপটাকে দেখা গেল না।
আমাদের মাথাগুলোও উধাও।
পরে, আকাশের নীলটা যখন জ্বলে উঠল
কূয়োর অন্যপ্রান্তে জ্বলজ্বল করে, আর
আমাদের মাথাগুলো আবার ফুটে উঠল,
স্বচ্ছ জলে তাকিয়ে দেখি—
আরে, ওই তো, আমার চোখের পিছনেই
আমার মাথার খুলির মধ্যে,
কচ্ছপটা, ঘাপটি মেরে বসে আছে।
একটা কচ্ছপ আছে, আমরা
বাচ্চাদের বাঁদর দল
ছুটে যাই কূয়োর পাড়ে।
উঁকি দিই ভিতরে, দেখতে পাই
আমাদের মাথা, আর নীল আকাশ।
আমরা ইঁট-পাটকেল ছুঁড়ে, বাঁশের ডগা দিয়ে
জলটা নেড়ে ঘেঁটে দিই
কিন্তু কচ্ছপটাকে দেখা গেল না।
আমাদের মাথাগুলোও উধাও।
পরে, আকাশের নীলটা যখন জ্বলে উঠল
কূয়োর অন্যপ্রান্তে জ্বলজ্বল করে, আর
আমাদের মাথাগুলো আবার ফুটে উঠল,
স্বচ্ছ জলে তাকিয়ে দেখি—
আরে, ওই তো, আমার চোখের পিছনেই
আমার মাথার খুলির মধ্যে,
কচ্ছপটা, ঘাপটি মেরে বসে আছে।
-----------------------------------------------
---- ইসমাইল, তেলুগু কবি; বংলা অনুবাদ আমার
---- ইসমাইল, তেলুগু কবি; বংলা অনুবাদ আমার
// কারো একার //
যখন প্রত্যেকটি বাড়ি তাকিয়ে আছে পশ্চিম দিকে আমার বাড়িটা মুখ ঘুরিয়ে পূবমুখো; যখন সব ছেলের আছে ফর্সা মা, আমার মা কালো, ফর্সা না; যখন সবাই দ্রুত হাঁটছে, আমি তখন এক অলস মাস্তুল; আর ওরা সবাই যখন হাসির লটারি তোলে আমি তখন নিশ্চিত একজন হেরো। --- মলয়ালি কবি, আত্তুর রবিবর্মা; বাংলা অনুবাদ আমার" |
"পড়তা হ্যায় ফুল বর্ক সে গুলজার কী তরফ
ধড়কে হ্যায় জী কফস মেঁ গম-এ-আশিয়ান সে
তুমকো তো ইলতিফাত নহীঁ হাল-এ-জার পর
অব হম মিলেঙ্গে আউর কিসু মেহরবান সে।
--- মীর তকি ‘মীর’
(ঝড়ল ফুল বিদ্যুৎ যেন বাগান জুড়ে
কাঁপছে বুকের খাঁচার ভিতর পাখির বাসার দুঃখ যত
খেয়াল তোমার মোটেই তো নেই চারিপাশের দুর্গতিতে
এবার আমায় যেতেই হবে অন্য কোন হৃদয় তরে।)"
ধড়কে হ্যায় জী কফস মেঁ গম-এ-আশিয়ান সে
তুমকো তো ইলতিফাত নহীঁ হাল-এ-জার পর
অব হম মিলেঙ্গে আউর কিসু মেহরবান সে।
--- মীর তকি ‘মীর’
(ঝড়ল ফুল বিদ্যুৎ যেন বাগান জুড়ে
কাঁপছে বুকের খাঁচার ভিতর পাখির বাসার দুঃখ যত
খেয়াল তোমার মোটেই তো নেই চারিপাশের দুর্গতিতে
এবার আমায় যেতেই হবে অন্য কোন হৃদয় তরে।)"
// কালো রুটি //
একটা ছেঁড়া ঠোঙার বুকে
যে কবিতাটা কালো সিঁড়ি হয়ে ঝরছিল হঠাৎ
তার বুক চিরে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়
টাইপসেটারের আঙুল চেঁছে কলম বানানোয় এমনটা
ঠোঙাটা আঁটসাঁটই, লিকেজ নেই
ভেতরে গরম আলুর চপের তেল ছড়িয়ে
প্রতিটি মুড়ির দানা ঝকঝকে
মুচমুচে
টাইপসেটারের আঙুল নেই থাকে না
সমীর চৌধুরির ছিল না
কালো রুটির জন্য ঠোঙার দরকার নেই
সমীর তাই ঠোঙা চেনে না।
সমীর মুড়ি-তেলেভাজা চেনে না।
সমীর কবিতা চেনে না
না চিনেই সে বেশ হেঁটে চলে গেল
১৪ সেপ্ট, ২০১২------------
// অনুবাদ //
পড়তা হ্যায় ফুল বর্ক সে গুলজার কী তরফ
ধড়কে হ্যায় জী কফস মেঁ গম-এ-আশিয়ান সে
তুমকো তো ইলতিফাত নহীঁ হাল-এ-জার পর
অব হম মিলেঙ্গে আউর কিসু মেহরবান সে।
---
মীর তকি ‘মীর’
(ঝড়ল ফুল বিদ্যুৎ যেন বাগান জুড়ে
কাঁপছে বুকের খাঁচার ভিতর পাখির বাসার দুঃখ যত
খেয়াল তোমার মোটেই তো নেই চারিপাশের দুর্গতিতে
এবার আমায় যেতেই হবে অন্য কোন হৃদয় তরে।)
--- অরুণ (অনুবাদ)
// না-কষ্টের কথা //
‘আমার কেউ নেই, মা বাবা ভাই বোন...’
সে কি! তা হয় নাকি? আট ভাই বোন না?
‘তবু। হয়। হয়েই থাকে। সারা বিশ্বজুড়েই হয়।’
তো কষ্ট পাচ্ছ খুব? মায়ের পেট ঘেঁষা এতজন! হবেই।
‘কষ্ট পেলে তো মিটেই যেত। আমার কষ্ট নেই।
বাবা ধুঁকছিলেন গভীর ক্যান্সারে,
জানালার শিক ছেড়ে ঘরের ভেতরে ঢুকিনি।
বাবা চ্যালাকাঠ। ছুঁইনি। প্রণাম না। কাঁধেও না।
বরং শ্মশানের পথ বেঁকে সিনেমায়, জংলী।
বোবা চোখ মেলে মা জল চাইলেন, দাদা ছুটে গেলেন, সেজদা, ছোটবোন
আমার হাতে জলের গ্লাস, আমি দেয়ালে ঠেস।
মা সবাইকে দেখলেন, আমাকে না।
দিব্বি সিঁড়ি বেয়ে নাটুদার দোকানে।
নাটুদা, মা মরে গেলো। একটা বিড়ি দেবে?
বিড়িটার তো কষ্টের বালাই নেই।
দাঁতের চাপে বন্দী, দাউ দাউ।
বড়দা মরে গেছে। জানি না কেনো মরে গেলো
ছিটকিনি তোলা ঘরে বন্ধ পড়ে ছিলো দেহ।
আমি শিকল খুলিনি।
অগাস্ট মাস, হাত পাখা নিয়ে পিঠের ঘাম শুকিয়েছি
বড়দাকে বাতাস করতে ছিটকিনি খুলিনি।
সকালে যখন কান্নার রোল উঠল, আমি কাঁদিনি।
আবার নাটুদার কাছে।
দাদাটা মরে গেলো। একটা বিড়ি দেবে গো, নাটুদা?
দুটো দিয়েছিল। একটা দাঁতের যাতায় জ্বলছিল
একটা কানে গুঁজে রেখেছিলাম।
মেজদাটাও মরে গেলো একদিন।
মুখ দিয়ে রক্তের নদী। বালতির জল লাল, আবার লাল।
আমাকে বলল, ফেলে আয়। কী ঘণ রক্ত! জলেও গোলে না।
কুয়োর মধ্যে ফেলতে থাকি। গুলে যায়।
সাফ জল। রক্তের রেখামাত্র নেই।
মেজদা বাঁচল না।
নাটুদা, মেজদাটা মরে গেলো। একটা বিড়ি দেবে?
সেই বিড়ি আর ধরে না।
নাটুদা চালাকি করে আমাকে ভেজা বিড়ি দিয়েছে।
রাগ হল। কষ্ট পাই নি তা বলে।
এবার বাড়ির বাইরে।
যক্ষা রুগীর রক্ত কূয়োর জলে মিশিয়ে সবাইকে মেরে ফেলার চেষ্টা।
কে যেন রায় দিল।
গেট আউট!
২১ মার্চ ২০১২.....................
ঘুম আসে না ঘুম আসে না
চোখের কোণে কালি
ঘুম আসে না ঘুম আসে না
বর্গীরা দেয় তালি
ঘুম আস না ঘুম আসে না
তীর বন্দুক হাতে
ঘুম আসে না ঘুম আসে না
হাত মেলাতে হাতে।।
মার্চ, ২০১২.....................।।
No comments:
Post a Comment