My Readers

Tuesday, March 20, 2012

The Day before Holi

আমাদের ছোটবেলায় দোলের চেয়ে আনন্দ ছিল ন্যাড়াপোড়ায়। আগের সন্ধ্যায় বুড়ির ঘর জ্বালানোয়। পাড়ায় পাড়ায় কম্পিটিশন। কাদের বুড়ির ঘর কত বড়। কারা নিজেদের বুড়ির ঘর কতক্ষণ আগলে রাখতে পারে। খড় দিয়ে তৈরি হত বুড়ির ঘর। ছোট ছোট আবার ইয়া বড় বড়। আমাদের মত ছোটদের কাজ ছিল, খড়ের গাড়ি থেকে খড় চুরি করা। কত বয়স? ছয় সাত, আট? রাস্তার বাঁকের একটু আগে দাঁড়িয়ে যেতাম তিন-চারের দল। খড় বোঝাই গরুর গাড়ি এলেই পিছন থেকে খড় বাঁধার মোটা রশি ধরে রুবল আঁটি টেনে টেনে মাটিতে ফেলত। এইতে সে মস্ত ওস্তাদ। খড়ের গাড়ি থাকে মস্ত উঁচু। গাড়োয়ানের পেছনে দেখার উপায়ই নেই। বাঁক নিলে তো নয়ই।

একবার একটা ট্রাক্টর এলো ওই রাস্তায়। পিছনে ট্রলি বোঝাই খড়। রুবলের দায়িত্ব। ছুটে গেলো। ট্রলির পিছনে ঢাকনা টানা। এবার ট্রলির পাশ থেকে খড় টানতে লাগল রুবল। খড় বাঁধা দড়িতে ঝুলে ঝুলে। খড়ের আঁটি মাটিতে পড়ছে, আর আমরা তা কালেক্ট করে উর্ধশ্বাস। সেবার সবার শেষে আমার কালেক্ট করার। দুটো আঁটিও বুকে সাঁটিনি, ও মাগো! রুবল দড়ি ছেড়ে লাফিয়ে নামতে গেলো আর অমনি রুবলের মাথাটাকে ঘাসের চাপড় বানিয়ে গুঁড়িয়ে চলে গেল ট্রলির মস্ত চাকাটা! আমি এখনো মনে করতে পারি না, আমি কী করেছিলাম তখন। শুকনো রক্তশূণ্য ঘাসের চাপড়টা মনে পড়ে শুধু।

সেবার আমাদের বুড়ির ঘর বানানো হয়নি। তারপর কোনবারই না। আজো না।


####

আবির দেখলেই দোলের কথা মনে পড়ে। আর দোলের কথা মনে এলেই এক ধুন্ধুমার যুদ্ধ ভেসে ওঠে চোখে। পশ্চিম থেকে ঢল দিয়ে নামছে লম্বা চওড়া ফর্সা একগাদা দুর্দ্ধর্ষ নির্মম মানুষ, পূর্ণিমার রাতে মৌতাতে মশগুল কালো খর্বকায় স্থূল ঝিমুনো নির্বিকার কিছু মানুষের গ্রামে গঞ্জে, পাহাড়ে জঙ্গলে। চোখের নিমেষে ছাড়খার কুটিরের সারি। রক্তস্নাত নিজবাসভূম। সুরাসুর পাল্টাপাল্টি করে পরস্পরের ভূমিকা। রক্ত চিহ্ণিত হয় আবিরের রঙে, আর বিজয় পায় প্রেমমালা, ভালোবাসার। কোথায় যেন পড়েছিলাম, আমার এই মনে পড়া নাকি ইতিহাস সত্য। তাই কি?

No comments: